মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৮ অপরাহ্ন

১০লক্ষ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রী’র দেড়কোটি টাকার জমি দখলের পায়তারা

শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন হেওয়ালী বেগমের পুত্র মো. আবিদুর রহমান চৌধুরী (সোহেল)।

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা : মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে একটি চিহ্নিত ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ১০লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে না পারায় এক মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রী’র ৪৪ বছরের দখলীয় ভূমি জবরদখলের পায়তারা ও হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

শহরের স্টেশন রোডস্থ নিউ মার্কেট নিবাসী মুক্তিযোদ্ধ মরহুম মো: মহিবুর রহমান চৌধুরীর স্ত্রী মোছা: হেওয়ালী বেগম এর স্বত্ব মালিকানাধিন শ্রীমঙ্গল উপজেলার মোহাজেরাবাদ গ্রামের বালিশিরা পাহাড় ব্লক ১ এর ও ৩৬ দাগের প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যে ৩ একর ৫০ শতক ভূমি জবর দখল নিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সিন্ডিকেটটি।

গত ১মাস পূর্বে ভূমির মালিক হেওয়ালী বেগম এর পুত্র মো. আবিদুর রহমান চৌধুরী (সোহেল) কে ১০ লক্ষ টাকা না দিলে জমি দখলসহ তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এঘটনায় ভূমির মালিক হেওয়ালী বেগম এর পুত্র ভুক্তভুগি মো. আবিদুর রহমান চৌধুরী (সোহেল) স্থানীয় থানা লিখিত অফিযোগ দিলেও পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি।

রবিবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে হেওয়ালী বেগমের পুত্র মো. আবিদুর রহমান চৌধুরী (সোহেল) এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘শ্রীমঙ্গল উপজেলাধীন আশীদ্রোন ইউনিয়নের বালিশিরা পাহার, ব্লক নং ১ এ আমার মা হেওয়ালী বেগম দলিল নং ২৪১৬/১৯৬৯ইং, দলিল নং ২৯৫৫/১৯৭৫ইং, দলিল নং ৩৩৪৭/১৯৭৫ইং এবং দলিল নং ৩৩৯০/১৯৭৫ইং সনে পৃথক কবলা দলিলের মাধ্যমে ৩ একর ৫০ শতক ভূমি ক্রয় করেন। জমির এসএ রেকর্ডমূলে নামজারী করে ভূমি কর পরিশোধ করে আসছি’।

তিনি বলেন, ‘বেশ কিছু দিন ধরে রাধানগর নিবাসী আব্দুস শুক্কুর গং কিছু জ্বাল দলিল সৃষ্টি করে মায়ের বর্ণিত সম্পত্তি জবরদখল নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৫ মে উক্ত আব্দুস শুক্কুরের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী আমার নিকট ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা আমার ওই ভূমি জবরদখলসহ প্রাণ নাশের হুমকি দেয়।

এ ঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানায় আব্দুস শুক্কুরসহ ১১ জনের নাম উল্লেখসহ করে অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হলেও পুলিশ এখনও কোন পদক্ষেপ নেয়নি। আইনের আশ্রয় নেয়ার পাশাপাশি প্রতিকার চেয়ে শহরের গন্যমান্য বিশিষ্ট ব্যক্তি ও জন প্রতিনিধিদের অবগত করি। কিন্তু দুঃখের সাথে লক্ষ্য করেছি- শহরের কিছু প্রভাবশালী স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি সিন্ডিকেট করে আমার প্রতিপক্ষের পক্ষাবলম্বন করে নিজেরাই আর্থিকভাবে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছেন। এই সিন্ডিকেটের কারণে বালিশিরা পাহার অশান্ত হয়ে উঠেছে। কতিপয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠা চক্রটি প্রভাব বিস্তার করে একের পর এক সরকারি, খাস, ব্যক্তি মালিকানা জমি জবরদখল করে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছে। চক্রের সদস্যরা জীবিকা নির্বাহে জন্য কোন কাজ না করলেও ফন্দি ফিকির আর জালিয়াতি করে অন্যের জমি জবরদখল করাই তাদের একমাত্র কাজ।’

সংবাদ সম্মেলনে আবিদুর রহমান চৌধুরী দুঃখ করে বলেন, ‘আমার মরহুম পিতা মুহিবুর রহমান চৌধুরী ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে শ্রীমঙ্গল শহর আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালিন শ্রীমঙ্গল থানা আওয়ামীলীগের কোষাধক্ষ্য’র দায়িত্ব পালন করেন। ৭১’র মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন করেন। মরহুম মোহাম্মদ ইলিয়াস, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান ছিলেন বাবার রাজনৈতিক বন্ধু। আমাদের পরিবার শুধুু শ্রীমঙ্গল নয় মৌলভীবাজার মহকুমা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ডের অন্যতম আর্থিক অনুদানদাতা ছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে নেতৃত্বে গড়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতি আমার মরহুম বাবার অনেক অবদান রয়েছে। তা সত্ত্বেও আমার বাবার অবর্তমানে আজ আমরা ভুমিদস্যূদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছি। এই ভূমিখেকো চক্রটি যে কোন সময় সন্ত্রাসী কায়দায় মায়ের ৪৪ বছরের ভোগ দখলীয় জমি জবরদখলের করতে পারে- এনিয়ে আশংকার মধ্যে রয়েছি । এসব ঘটনা আমার বয়োবৃদ্ধ মা’সহ পরিবার পরিজনকে অনেক কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে’।

সংবাদ সম্মেলনে ভূমি খেকো চক্রের হাত থেকে জমি রক্ষা ও পরিবারের নিরাপত্তা বিধানে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com